সাহাজুল সাজু :
মেহেরপুরের গাংনীতে কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা বাদে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে লড়ে ৩জন ও আওয়ামী লীগের দলীয় মনােনয়ন পেয়ে ২জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে কাথুলী,তেঁতুলবাড়ীয়া,বামন্দী,মটমুড়া ও সাহারবাটী ইউনিয়নে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কাথুলী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান রানা, মটমুড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহম্মেদ এবং তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা বিশ্বাস চেয়ারম্যান হিসাবে জয়লাভ করেছেন। এছাড়াও সাহারবাটী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনােনিত প্রার্থী মশিউর রহমান ও বামন্দী ইউনিয়নে ওবাইদুর রহমান কমল চেয়ারম্যান হিসাবে জয়লাভ করেছেন।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৪২ ভোটে জয়লাভ করেছেন নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনােনিত প্রার্থী মশিউর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মােট ভােট পেয়েছেন ৭ হাজার ৬৩৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী রাকিবুল ইসলাম টুটুল মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৯৯২ ভোট পেয়েছেন । এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী বাশীরুল আজিজ হাসান (চশমা) প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৯৯৬ ভোট পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি (জাপা)’র মনােনিত প্রার্থী বাবলু হোসেন (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯৪ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানারুল ইসলাম পেয়েছেন ৮১ ভোট। বামন্দী ইউনিয়নে আ.লীগের মনােনিত প্রার্থী ওবাইদুর রহমান কোমল নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৬৪১ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন । তিনি মােট ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৫২৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল আওয়াল চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৮৩।
এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল হক বিশ্বাস (আনারস) প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ৩১৩ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান সম্রাট (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ২৮২ ভোট পেয়েছেন । কাথুলী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান রানা (আনাস) প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মােট ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৮৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল বাসার (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ২ ভোট। আওয়ামী লীগের মনােনিত প্রার্থী গোলজার হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ২। স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব আলী (দুটি পাতা) প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৩৬৫ ভোট পেয়েছেন ।
তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা বিশ্বাস ১ হাজার ৩৭১ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে মােট ভােট পেয়েছেন ৬ হাজার ৮২৯ । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেব হোসেন (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫৮ ভোট। আওয়ামী লীগের মনােনিত প্রার্থী আব্দুল্লাহ-আল মামুন নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮০ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৯১২ ভোট পেয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনােনিত প্রার্থী এনামুল হক (হাতপাখা) প্রতীক নিয়ে ভােট পেয়েছেন ৪০০ ভোট। মটমুড়া ইউনিয়নে আ.লীগের মনােনিত প্রার্থী গােলজার হােসেনকে ১২ হাজার ৭১৮ ভোটে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও মটমুড়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ। সােহেল আহমেদ আনারস প্রতীক নিয়ে মােট ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩২০। নৌকা প্রতীক নিয়ে আবুল হাসেম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০২ ভোট। জাপা প্রার্থী আব্দুস সালাম (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬১৯ ভোট। এদিকে, ভােটগ্রহণের দিন বৃহস্পতিবার সকালে সাহারবাটী ইউনিয়নের ভােমরদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভােট কেন্দ্রে দু’জন মেম্বর প্রার্থীর সমর্থদের মধ্যে ভােট কেন্দ্রে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা হয়। উত্তেজনার সময় হাফিজুল ইসলাম নামের একজন মেম্বর প্রার্থী হামলার শিকার হন। তবে উত্তেজনার সময় পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়াও এদিন মটমুড়া ইউনিয়নের সিন্দুরকৌটা ভােট কেন্দ্রে কিছুটা উত্তেজনা হলেও পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিন সকাল ১০টার দিকে মটমুড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনােনিত প্রার্থী আবুল হাশেম ও তার লোকজন কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকায় সিল মারেন। এসময় তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহম্মেদের কর্মী-সমর্থকরা। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতি দেখে কৌশলে সটকে পড়ে রক্ষা পান নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা।
